মিলিন্দপ্রশ্ন (পর্ব-০১)

মিলিন্দ-প্রশ্ন

বাহির কথা



।। নমোতস্স ভগবতো অরতো সম্মাসম্বুদ্ধসস ।।

১। গঙ্গানদী যেমন সাগরে উপনীত হয় , সেইরূপ সাগল নামক উত্তম নগরে রাজা মিলিন্দ নাগসেন সমীপে উপনীত হইলেন।
অবিদ্যান্ধকারনাশক , জ্ঞানোল্কাধর, বিচিত্রবক্তা রাজা (নাগসেন সমীপে) আসিয়া যুক্তিসঙ্গত বহুবিধ সূক্ষ্ম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন।
সেই প্রশ্ন ও উত্তরসমূহ গভীর অর্থযুক্ত, মনোরম, শ্রুতিমধুর , অদ্ভুত ও রোমাঞ্চকর।
অভিধর্ম ও বিনয়ে গাম্ভীর্যমন্ডিত, সূত্রানুকুল নাগসেন-কথা যুক্তি ও উপমায় বিচিত্র। 
ইহাতে প্রণিধানপূর্বক চিত্তকে প্রসন্ন করিয়া সংশয়বিনোদক গম্ভীর প্রশ্নসমূহ আপনারা শ্রবন করুন। 


সাগল নগরের বর্ণনা

২ । (এইরূপ শুনা যায়ঃ)
যবনদের বাণিজ্য-ব্যবসায়ের কেন্দ্র সাগল নামক এক নগর ছিল। সেই নগর নদী পর্বত শোভিত, রমণীয় ভূমিভাগে প্রতিষ্ঠিত, আরাম-উদ্যান-উপবন তড়াগ-পুষ্করিণী দ্বারা সুসম্পন্ন, নদী-পর্বত-বনে অত্যন্ত রমণীয় ছিল। সেই নগর দক্ষ স্থপতি দ্বারা নির্মিত হইয়াছে। উহাতে শত্রু বা শত্রুর উৎপীড়ন ছিল না। সেখানে অনেক প্রকার বিচিত্র দৃঢ় মন্ডল-প্রকোষ্ঠ ছিল। নগরের সিংহদ্বার তোরণ বিশাল ও সুন্দর ছিল। গভীর পরিখা ও পীতবর্ণ প্রাকার দ্বারা অন্তঃপুর পরিবেষ্টিত ছিল। পথ-অঙ্গন ও চৌরাস্তার সংযোগস্থল উত্তমরূপে বিভক্ত ছিল। দোকান সুসজ্জিত ও উত্তম পণ্যদ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। স্থানে স্থানে বিবিধ উত্তম দানশালা সতত শোভিত ছিল।
ইহা ছিল হিমালয়-পর্বতশৃঙ্গসদৃশ শত-সহস্র শেষ্ঠ ভবন মন্ডিত। হাতি , ঘোড়া, রথ ও পদাতিক জন দ্বারা উহা সমাকুল ছিল। দলে দলে সুন্দর নরনারী বিচরণ করিত। সেই নগর ক্ষত্রিয়, ব্রাহ্মণ, বৈশ্য, শূদ্রাদি সর্বপ্রকারের মনুষ্যের দ্বারা সমাকীর্ণ ছিল। শ্ৰমণ, ব্রাহ্মণ তথা সভাজন দ্বারা ইহা সংঘটিত ছিল। বহুবিধ বিদ্বান ও বীর লোকের কেন্দ্র ছিল। কাশী, কোটুম্বর আদি স্থানে প্রস্তুত নানাবিধ বস্ত্রের বড় বড় দোকান ছিল। সুপ্রসারিত অনেক প্রকার সুন্দর পুষ্প এবং গন্ধযুক্ত দ্রব্যের দোকানের সুগন্ধের দ্বারা ইহা সুরভিত ছিল। অভিলষিত বহু রত্নে পরিপূর্ণ ছিল। সকল দিকে শৃঙ্গার বিলাসী বণিকদের দোকান সম্প্রসারিত ছিল। কার্ষাপণ, রূপা, চাঁদি, স্বর্ণ ও পাথর পরিপূর্ণ সেই নগর বহুমূল্য উজ্জ্বল নিধির ভান্ডার ছিল। নানা প্রকার ধন-ধান্য-বিত্ত-উপকরণে ভান্ডার ও কোষ পরিপূর্ণ ছিল। তথায় বহু পানীয়-খাদ্য-ভোজ্য-লেহ্য-পেয় আস্বাদনীয় দ্রব্য ছিল। সেই নগর উত্তরকুরু সদৃশ্য শস্যপূর্ণ তথা অলকানন্দা নামক দেবপুরের ন্যায় সম্পন্ন ছিল।


গ্রন্থের বিভাগ

৩ । ইহার পর তাঁহাদের (মিলিন্দ ও নাগসেনের) পূর্ব কর্মের বিষয় বলা হইবে। বলিবার সময় ছয় প্রকারে বিভাগ করিয়া বলিতে হইবে। যথা-পূৰ্বযোগ, মিলিন্দ প্রশ্ন, মেন্ডক প্রশ্ন, অনুমান প্রশ্ন, উপমাকথা প্রশ্ন। ইহাতে মিলিন্দ প্রশ্নের দুই ভাগঃ (ক) লক্ষণ প্রশ্ন ও (খ) বিমতিচ্ছেদন প্রশ্ন। মেন্ডক প্রশ্নেরও (ক) মহাবর্গ (খ) যোগীকথা প্রশ্ন নামক দুই ভাগ আছে।

নাগসেন ও মিলিন্দের পূর্বযোগ কথা

৪ । পূর্বযোগের অর্থ- তাঁহাদের পূর্বজন্যে কৃত কর্ম।
অতীতকালে ভগবান কাশ্যপ-বুদ্ধের শাসনের সময় গঙ্গীনদীর সমীপে এক আশ্রমে এক বৃহৎ ভিক্ষু সংঘ বাস করিতেন। তথায় ব্রত শীল সম্পন্ন ভিক্ষুগণ প্রাতঃকালেই গাত্রোত্থান করিয়া যষ্টি সম্মার্জনী লইয়া বুদ্ধের গুণাবলী চিন্তা করিতে করিতে অঙ্গন সম্মার্জন করিতেন এবং আবর্জনাগুলি স্তুপীকৃত করিতেন।
৫ । একদিন এক ভিক্ষু কোন শ্রামণেরকে কহিলেন-এখানে এস, শ্রমণের। এই আবর্জনাগুলি ফেলিয়া দাও। সে না শোনার মত ভান করিয়া চলিয়া যায়। দ্বিতীয় বার, তৃতীয় বার আমন্ত্রিত হইয়াও সে না শোনার ন্যায় চলিয়া যায়। তৎপর সেই ভিক্ষু “এই শ্রামণের বড়ই অবাধ্য চিন্তা করিয়া ক্রোধবশতঃ সম্মার্জনী দন্ডের দ্বারা তাহাকে প্রহার করিলেন। তখন সে রোদন করিতে করিতে ভয়ে আবর্জনা ফেলিবার সময়- “এই আবর্জনা নিক্ষেপজনিত পূণ্যকর্ম প্রভাবে যে পর্যন্ত আমি নির্বাণ লাভ না করি, ইহার মধ্যে যে যে স্থানে জন্মধারণ করি না কেন আমি যেন মধ্যাহ্ন সূর্যের ন্যায় সমর্থ ও মহাতেজস্বী হই”- প্রথমতঃ এইরূপ প্রার্থনা করিল।
৬ । আবর্জনা পরিষ্কার করিয়া সে স্নানের নিমিত্ত গঙ্গা নদীর ঘাটে গেল । গঙ্গার গড়গড় শব্দায়মান তরঙ্গবেগ দর্শন করিয়া– “যাবৎ আমি নির্বাণ প্রাপ্ত হই তাবৎ জন্মে জন্মে যেন এই তরঙ্গবেগের ন্যায় প্রত্যুৎপন্ন ও অক্ষয়প্রতিভাসম্পন্ন হইতে পারি” -এই বলিয়া দ্বিতীয় বার প্রার্থনা করিল।
৭ । সেই ভিক্ষুও সম্মার্জনী-ঘরে সম্মার্জনী রাখিয়া স্নানের নিমিত্ত গঙ্গা তীর্থে যাইবার সময় শ্রমণেরের প্রার্থনা শুনিলেন এবং চিন্তা করিলেন- শ্রামণের আমা দ্বারা নিয়োজিত হইয়াই যদি এরূপ প্রার্থনা করে তবে আমায় প্রার্থনা কেন সিদ্ধ হইবে না? ”এই চিন্তা করিয়া তিনিও প্রার্থনা করিলেন-“যত দিন আমি নির্বাণ প্রাপ্ত না হই, ইতিমধ্যে জন্মে জন্মে আমি যেন গঙ্গার তরঙ্গবেগের ন্যায় অক্ষয়- প্রত্যুৎপন্নমতি হই, ইহার দ্বারা জিজ্ঞাসিত সর্ববিধ জটিল প্রশ্নকে নির্জটিল করিতে ও ব্যাখ্যা করিতে সমর্থ হই।"
৮ । তাহারা উভয়ে দেবলোক ও মনুষ্যলোক সংসরণ করিতে করিতে। এক বুদ্ধান্তর কাল গত করিলেন। তখন ভগবান বুদ্ধ যেমন মোগগলিপুত্র তিষ্য স্থবির সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছিলেন, সেইরূপ ইহাদের সম্বন্ধেও করিয়াছিলেন, “আমার পরিনির্বাণের পঞ্চশত বৎসর পর ইহারা দুজন জন্মগ্রহণ করিবে, আর যে সকল ধর্ম বিনয় আমি সূক্ষ্মভাবে উপদেশ করিয়াছি, তাহারা তাহা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও উপমা যুক্তিবলে সরল স্পষ্ট করিয়া বিভাগ করিবে। ”
৯ । তাঁহাদের মধ্যে সেই শ্রামণের জম্বুদ্বীপের সাগল নামক নগরে মিলিন্দ নামে রাজা হইলেন। তিনি বড় পন্ডিত, চতুর, মেধাবী ও ভূত-ভবিষ্যৎ, বর্তমান মন্ত্র ও যোগবিধান ক্রিয়ার আচরণ করিবার পরীক্ষা করিতেন। তিনি অনেক বিদ্যা অধ্যয়ন করেন। যথা- (১) শ্ৰতি (২) স্মৃতি (৩) সাংখ্য (৪) যোগ ৯৫) ন্যায় (৬) বৈশেষিক (৭) গণিত (৮) সঙ্গীত (৯) চিকিৎসা (১০) চতুর্বেদ (মতান্তরে ধনুর্বিদ্যা) (১১) পুরাণ (১২) ইতিহাস (১৩) জ্যোতিষ (১৪) যাদুবিদ্যা (১৫) হেতু বা তর্ক (১৬) মন্ত্রণা (১৭) যুদ্ধবিদ্যা (১৮) ছন্দ এবং (১৯) সামুদ্রিক এই উনবিংশতি শাস্ত্রে তিনি পারদর্শী ছিলেন। তিনি ছিলেন তার্কিক, দুর্ধর্ষ,দুঃসহ, বিভিন্ন তীর্থঙ্করদের মধ্যে অগ্রণীরূপে সম্মানিত। সমগ্র জম্বুদ্বীপে মিলিন্দ রাজার ন্যায় শৌর্য, বীর্য ও পরাক্রমে এবং প্রজ্ঞায় অপর কেহ ছিলেন না। তিনি ধনাঢ্য, মহাধনী এবং বিপুল সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন। তাহার সৈন্যসামন্ত ছিল অসংখ্য।
১০ । তখন একদিন রাজা মিলিন্দ অনন্ত বলবাহনযুক্ত স্বীয় চতুরঙ্গিনী সেনার দর্শন অভিলাষে নগরের বাহিরে গেলেন। তথায় সেনা গণনা করাইয়া বাদপ্রিয়, লোকায়ত ও বিতন্ডাবাদীদের সহিত তর্কেচ্ছায় আলাপপ্রবণ, ঔৎসুক্যচিত্ত, নির্ভীক ও বিজ্বম্ভকারী সেই রাজা উপরদিকে সূর্য অবলোকন করিলেন এবং নিজের অমাত্যকে আহ্বান করিলেন- “এখনও অনেক সময় বাকি আছে, এত সত্বর নগরে প্রবেশ করার কি প্রয়োজন? এমন কোন পন্ডিত শ্ৰমণ, ব্রাহ্মণ, সংঘনেতা, গণনেতা, গণাচার্য আছেন কি যিনি অরহত সম্যক্ সম্বুদ্ধ সম্বন্ধে জানেন, যিনি আমার সহিত আলাপ ও আমার সন্দেহ নিরসন করিতে পারেন, যাহাঁর নিকট উপস্থিত হইয়া প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি সংশয় বিনোদন করিতে পারি?”
১১ । এইরূপ উক্ত হইলে পঞ্চশত যবন রাজা মিলিন্দকে কহিলেন- “মহারাজ! ছয়জন ধর্মগুরু আছেনঃ (১) পূরণ কাশ্যপ, (২) মক্খলি গোশাল, (৩) নিগণ্ঠ নাতপুত্র, (৪) সঞ্জয় বেলটঠিপুত্র, (৫) অজিত কেশকম্বলী ও (৬) ককুধ কচ্চায়ন। তাহারা সংঘনায়ক, গণনায়ক, গণাচার্য, প্রাজ্ঞ, যশস্বী ও তীর্থঙ্কর এবং বহুজনের দ্বারা সম্মানিত। মহারাজ! আপনি তাহাদের নিকট গিয়া প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন এবং সংশয় নিরসন করুন।”

পূরণ কাশ্যপের নিকট রাজা মিলিন্দের গমন



 
১২ । তখন রাজা পঞ্চশত যবন পরিবৃত হইয়া ভদ্র যান সুশোভিত রথে আরোহন করিয়া পূরণ কাশ্যপের নিকট উপনীত হইলেন। তথায় উপস্থিত হইয়া পূরণ কাশ্যপের সহিত সাদর সম্ভাষণ বিনিময় করিয়া এক প্রান্তে বসিলেন। এক প্রান্তে বসিয়া রাজা মিলিন্দ কাশ্যপকে বলিলেন, “ভন্তে কাশ্যপ! কে এই সংসার পালন করিতেছে?”
“মহারাজ! পৃথিবী সংসার পালন করিতেছে।”
“ভন্তে কাশ্যপ! যদি পৃথিবী সংসার পালন করে, তবে অবীচি নরকগামী প্রাণিগণ পৃথিবী অতিক্রম করিয়া কেন গমন করে?”
 রাজা এইরূপ বলিলে পূরণ কাশ্যপ তাহা গ্রহণ করিতেও পারেন না , আবার গ্রাহ্যও করিতে পারেন না। তিনি নতগ্রীব, অধোমুখ, হতবুদ্ধি হইয়া বসিয়া রহিলেন।

মক্খালি গোশালের নিকট রাজা মিলিন্দের গমন

            ১৩ । অতঃপর রাজা মিলিন্দ মক্খালি গোশালকে জিজ্ঞাসা করিলেন“ ভন্তে গোশাল! ভাল ও মন্দ কর্ম আছে কি? পুণ্য ও পাপ, সুকৃত ও দুষ্কৃত কর্মের ফল-বিপাক আছে কি?”
“না, মহারাজ! ভাল ও মন্দ কোন কর্ম নাই, পাপ ও পূণ্য কর্মের কোন ফল নাই। মহারাজ! ইহলোকে যাঁহারা ক্ষত্রিয়, তাহারা পরলোকে গিয়া পুনঃ ক্ষত্রিয়ই হইবেন। যাহারা ব্রাহ্মণ, বৈশ্য, শূদ্র, চন্ডাল বা পুস্কুস জাতি তাহারা পরলোকে গিয়াও পুনঃ ব্রাহ্মণ, বৈশ্য, শূদ্র, চন্ডাল বা পুস্কুস জাতি হইবেন। পাপ ও পূণ্য কর্মের কি প্রয়োজন?” “ভন্তে গোশাল! যদি ইহলোকে যিনি ক্ষত্রিয় তিনি পরলোকে গিয়াও । ক্ষত্রিয়ই হইয়া থাকেন এবং পাপ ও পুণ্য কর্মের কোন করণীয় না থাকে, তাহা হইলে যাহারা ইহজগতে হস্তচ্ছিন্ন তাহারা পরলোকে গিয়াও পুনঃ হস্তচ্ছিন্ন হইবে, যাহারা পাদচ্ছিন্ন তাহারা পাদচ্ছিন্ন হইবে, যাহারা হস্তপাদছিন্ন তাহার হস্তপাদছিন্ন হইবে, যাহারা কর্ণ ও নাসিকাছিন্ন তাহারা কর্ণ ও নাসিকাছিন্ন হইবে কি?
রাজার কথা শুনিয়া গোশাল নীরব হইলেন।
১৪ । তখন রাজা মিলিন্দের মনে হইল- “অহো, জম্বুদ্বীপ শূন্য! অহো, জম্বুদ্বীপের খ্যাতি প্রলাপ মাত্র! আমার সহিত আলাপ করিতে পারেন, আমার সন্দেহ ভঞ্জন করিতে পারেন, এমন শ্রমণ ব্রাহ্মণ কি কেহ নাই?”
একদিন রাজা মিলিন্দ অমাত্যগণকে কহিলেন- “আজ অতি রমণীয় রাত্রি! প্রশ্ন জিজ্ঞাসার নিমিত্ত আজ কোন্ শ্ৰমণ ব্রাহ্মণের নিকট যাইতে পারি? কে আমার সহিত বাক্যালাপ করিতে সমর্থ, কে আমার সন্দেহ ভঞ্জন করিতে পারিবেন?”
এই কথায় অমাত্যগণ মৌনভাবে কেবল রাজার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন।
১৫ । সেই সময় দ্বাদশ বর্ষব্যাপী সাগল নগর শ্রমণ, ব্রাহ্মণ ও গৃহপতি পন্ডিত শূন্য ছিল। তথাপি রাজা যে স্থানে শ্রমণ, ব্রাহ্মণ কিংবা গৃহপতি বাস করিতেন, এরূপ সংবাদ শুনিতেন সে স্থানে গিয়া তাহাদিগকে প্রশ্ন করিতেন। তাহারা প্রশ্নোত্তর দ্বারা রাজাকে সন্তুষ্ট করিতে অসমর্থ হইয়া এদিক সেদিক চলিয়া যাইতেন। যাহারা অন্যত্র যাইতেন না তাহারা সকলে নীরবে অবস্থান করিতেন। ভিক্ষুগণ প্রায় হিমালয় পর্বতে গমন করিতেন।
১৬ । সেই সময় হিমালয় পর্বতের ’রক্ষিত তলে’ অনেক কোটিশত অর্হৎ বাস করিতেন ।


আয়ূষ্মান অশ্বগুপ্তের ভিক্ষুসংঘ আহ্বান

         ১৭ । এক সময় আয়ুষ্মন অশ্বগুপ্ত দিব্য কর্ণে রাজা মিলিন্দের খেদোক্তি শ্রবণ করিলেন। তিনি যুগন্ধার পর্বতশিখরে ভিক্ষুসংঘ সমবেত করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন- “বন্ধুগণ! রাজা মিলিন্দের সহিত বাক্যালাপ করিয়া তাহার সন্দেহ ভঞ্জন করিতে পারেন, এমন কোন সমর্থ ভিক্ষু আছেন কি?"
এইরূপ জিজ্ঞাসিত হইলে কোটিশত অরহতগণ নীরব রহিলেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার জিজ্ঞাসিত হইলেও তাহারা কোন প্রত্যুত্তর দিলেন না।
তখন আষুষ্মন অশ্বগুপ্ত ভিক্ষুসংঘকে কহিলেন- “বন্ধুগণ! তাবতিংস ভবনে বৈজয়ন্ত প্রাসাদের পূর্বদিকে কেতুমতী নামে এক বিমান আছে। তথায় মহাসেন নামক দেবপুত্র বাস করেন। তিনি মিলিন্দ রাজার সহিত বাক্যালাপ করিতে ও তাহার সন্দেহ ভঞ্জন করিতে সমর্থ হইবেন।” তখন কোটিশত অরহত যুগন্ধর পর্বত হইতে অন্তর্হিত হইয়া তাবতিংস স্বর্গে উপস্থিত হইলেন।
---#চলমান।
পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য আমাদের সাথে থাকুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

আমাদের ওয়েবসাইট আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকিজ ব্যবহার করে। দয়া করে সম্মতি দিন। Learn More
Accept !