চতুর্থ বর্গ
স্পর্শাদি ধর্মসমূহ অবিভাজ্য
৫৫। রাজা বলিলেন-
“ভন্তে নাগসেন! এই সম্মিলিত চেতন
ধর্মসমূহের পৃথক ভিন্ন ভিন্নভাবে
বিভাগ করিয়া দেখাইতে পারা যায় কি?
যেমন- ইহা স্পর্শ, ইহা
চেতনা, ইহা বিজ্ঞান, ইহা
বিতর্ক ও ইহা বিচার?”
“মহারাজ! এইরূপে দেখাইতে পারা যায় না।”
“উপমা প্রদান করুন।”
“মহারাজ! রাজার পাচক যদি যুষ
বা রস প্রস্তুত করে
সে তথায় দধি, লবণ, আদা,
জিরা, মরিচ প্রভৃতি অনেক
জিনিস প্রদান করে। রাজা যদি
তাহাকে বলেন- “আমাকে দধির রস পৃথক
করিয়া দাও, লবণের রস
পৃথক করিয়া দাও, আদা, জিরা
ও মরিচ প্রভৃতি প্রক্ষিপ্ত
সকল জিনিসের রস পৃথক করিয়া
দাও।' মহারাজ! তবে সে এই
সকল সম্মিলিত রসের এক রস
পৃথক করিয়া দিতে সমর্থ হইবে
কি? যেমন- অম্ল, মধু, তিক্ত, কষায়,
লবণ অথবা কটু?"
“না, ভন্তে! . . . . . . . তথাপি সমস্ত
রস নিজ নিজ লক্ষণানুসারে
উহাতে বিদ্যমান থাকে। মহারাজ! এইরূপেই সেই সম্মিলিত চেতনা
ধর্মসমূহের পৃথকত্ব ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ভাগ করিয়া
দেখাইতে পারা যায় না।
অথচ সমস্ত চেতন ধর্ম নিজ
নিজ লক্ষণানুসারে বিদ্যমান থাকে।”
“ভন্তে নাগসেন! আপনি দক্ষ।”
লাগসেনের প্রশ্ন
৫৬। স্থবির কহিলেন–
“মহারাজ! লবণ চোখে দেখিয়া
জানা যায় কি?”
“হাঁ, ভন্তে! জানা
যায়।”
“মহারাজ! সুষ্ঠুরূপে বিবেচনা করিয়া উত্তর দিবেন।”
“ভন্তে! জিহ্বদ্বারা জানা যায় কি?”
“হাঁ, মহারাজ! জিহ্বা
দ্বারা জানা যায়।”
“ভন্তে! সর্ববিধ লবণ জিহ্বা দ্বারা
জানা যায় কি?”
“হাঁ, মহারাজ! সর্ববিধ
লবণ জিহ্বা দ্বারা জানা যায়।”
“ভন্তে! যদি তাই হয়
তবে কি কারণে উহা
গরুর গাড়িতে তুলিয়া বহন করে? কেবল
লবণই বহন করা উচিত
নহে কি? ”
“মহারাজ! কেবল লবণ আহরণ
করা সম্ভব নহে। যেহেতু লবণ
ও উহার গুরুত্ব ভিন্ন
ভিন্ন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য হইলেও একসঙ্গে এমনভাবে মিলিত আছে যে পৃথক
করা সম্ভব নহে।”
“মহারাজ! লবণ তুলা-যন্ত্রে
মাপিতে পারা যায় কি?”
“হাঁ, ভন্তে! মাপা
যায়।”
“না, মহারাজ! লবণ
তুলা-যন্ত্রে তুলিয়া মাপা যায় না;
কেবল উহার গুরুত্ব মাপা
যায়।”
“ভন্তে নাগনেস! আপনি দক্ষ।”
[চতুর্থ বর্গ সমাপ্ত]
(লক্ষণ-প্রশ্ন সমাপ্ত)
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।