কর্ম ও কর্মফলের অস্তিত্ব
১৬। রাজা বলিলেন-
“ভন্তে নাগসেন! যখন এই নাম-রূপ দ্বারা ভালো।
কিংবা মন্দ কর্ম করা
হয় তখন সেই কর্মরাশি
কোথায় থাকে?”
“মহারাজ! অপরিত্যাগিনী ছায়ার ন্যায় সেই কর্মরাশি তাহার
অনুগামী হয়।”
“ভন্তে! সেই কর্মসমূহ দেখাইতে
পারা যায় কি- এখানে
বা সেখানে। উহার বিদ্যমান আছে?”
“মহারাজ! এই প্রকারে দেখাইতে
পারা যায় না।”
“উপমা প্রদান করুন।“
“মহারাজ! যে সকল বৃক্ষের
ফল এখনও ফলে নাই
উহাদের ফলগুলি এখানে বা সেখানে আছে
, এইভাবে দেখাইতে পারা যায় কি?”
“না, ভন্তে!”
“মহারাজ! এই প্রকার অবিচ্ছিন্ন
জীবনপ্রবাহে তাহাদিগকে দেখাইতে পারা যায় না
যে এখানে বা সেখানে সেই
কর্মসমূহ আছে।”
“ভন্তে নাগসেন! আপনি দক্ষ।”
জন্মগ্রহণকারীর জ্ঞান
১৭। রাজা বলিলেন-
“ভন্তে! যে জন্মগ্রহণ করে
সে কি জানে- ‘আমি
জন্মগ্রহণ করিব?”
“হাঁ, মহারাজ! যে
জন্মগ্রহণ করে সে জানে-
“আমি জন্মগ্রহণ করিব।”
“উপমা প্রদান করুন।”
“মহারাজ! কোন কৃষক জমিতে
বীজ বপন করিয়া উত্তমরূপে
বৃষ্টিপাত হইলে জানিতে পারে
কি ধান্য জন্মিবে?”
“হাঁ, ভন্তে! জানিতে
পারে।”
“মহারাজ! এই প্রকার, যে
জন্মগ্রহণ করে সে পূর্বেই
জানিতে পারে ‘আমি জন্মগ্রহণ করিব।”
“ভন্তে নাগসেন! আপনি দক্ষ।”
বুদ্ধের বিদ্যমানতা
১৮। রাজা বলিলেন-
“ভন্তে নাগসেন! বুদ্ধ ছিলেন কি?"
“হাঁ, মহারাজ! ভগবান
ছিলেন।”
“ভন্তে নাগসেন! তিনি এখানে বা
সেখানে কোথায় আছেন আপনি দেখাইতে
পারেন কি?”
“মহারাজ! ভগবান অনুপাদিশেষ নির্বাণ ধাতুতে পরিনির্বাপিত হইয়াছেন (যাহার পর তাহার ব্যক্তিত্বের
কোন নিদর্শন নাই), সুতরাং ভগবানকে এখানে বা সেখানে আছেন
বলিয়া প্রদর্শন করা যায় না।”
“উপমা প্রদান করুন।”
“মহারাজ! প্রজ্বলিত অগ্নিস্কন্ধের শিখা নির্বাপিত হইয়াছে,
সেই শিখা এখানে বা
সেখানে আছে বলিয়া দেখানো
যায় কি?”
“না, ভন্তে! সে
শিখা নিরুদ্ধ হইয়াছে, প্রজ্ঞপ্তির বহির্ভূত হইয়াছে।”
“মহারাজ! এই প্রকারে ভগবান
অনুপাদিশেষ নির্বাণধাতুতে নির্বাপিত হইয়াছেন, অস্তমিত হইয়াছেন; সুতরাং তাঁহাকে আর এখানে বা
সেখানে আছেন বলিয়া প্রদর্শন
করা যায় না। মহারাজ!
ধর্মকায় দ্বারা কিন্তু ভগবানকে প্রদর্শন করা যায় যেহেতু
ধর্ম ভগবান কর্তৃক দেশিত হইয়াছে।”
“ভন্তে নাগসেন! আপনি দক্ষ।”
[দ্বিতীয় বর্গ সমাপ্ত]
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।