বিশেষ দ্রষ্টব্য
২০০৪ সালে Opening
the Door of Your Heart and other Buddhist Tales of Happiness শিরোনামে প্রকাশিত
হওয়ার পর থেকে এই বিখ্যাত বইটি এপ্রিল ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলা ভাষা ব্যতীত পৃথিবীর অন্যান্য
২৪টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। জ্ঞান শান্ত ভিক্ষুকে কেবল ব্যক্তিগত
ব্যবহারের জন্য মূল প্রকাশনা সংস্থা টমাস সি লোথিয়ান প্রাইভেট
লিমিটেড, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
থেকে লেখকের পক্ষ হয়ে শর্তসাপেক্ষে- বিনামূল্যে বিতরণ এবং শুধু বাংলাদেশে
প্রকাশের জন্য ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় বইটি অনুবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর কোন বাণিজ্যিক প্রকাশনা
নিষিদ্ধ এবং আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
অনুবাদকের কথা
ধর্মদান সর্ব দানকে জয় করে। তাই এটি ধর্মদান হিসেবে সবার কাছে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ই-বুক আকারে উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো।
কেউ যদি এটি বই আকারে প্রকাশ করতে চায়, তবে সে অনুবাদকের সাথে যোগাযোগ
করতে পারে।
ব্লগারের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
বইটির
লেখক আজান ব্রহ্মবংশ ও বাংলা ভাষায় অনুবাক পূজনীয় জ্ঞান বংশ ভিক্ষুকে শ্রদ্ধাবনত কৃতজ্ঞতা
জানাচ্ছি। ’অনুবাদকের কথা’ অংশকে শক্তি করে আমার ব্লগ ‘ত্রিশরণে বইটি পর্ব পর্ব করে
প্রকাশ করতে সাহস পেয়েছি। যেহেতু বিনামূল্যে বিতরণের জন্য পিডিএফ আকারে উম্মোক্ত করে
দেওয়া হয়েছে, সেহেতু বইটি ব্লগে প্রচার করতে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি।
অধিকন্তু,
আমি লেখক ও অনুবাদকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি যদি কখনো পূজনীয় ভিক্ষুদ্বয়ের সম্মুখে
যদি আমার এই ব্লগ পড়ে ক্ষমা করে দিবেন।
শিমুল
বড়ুয়া উনন
এমএসএস,
অর্থনীতি
Email:
shimulios@outlook.com
বই পরিচিতি: হৃদয়ের দরজা খুলে দিন
আজান
ব্রাহমের গল্পগুলোতে অন্তর্দৃষ্টি, ভালোবাসা এবং করুণার মুহুর্তগুলো যেন আশার নদীর
মতো বয়ে যায়।
প্রায়
ত্রিশ বছর ধরে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসেবে জীবন কাটানো, পশ্চিমে জন্ম এবং
পড়াশোনা
করা, কিন্তু থাই বন ধারাতে (থাই ফরেস্ট ট্রাডিশন) প্রশিক্ষিত আজান ব্রাহম্
অনেকগুলো
হৃদয় নাড়া দেওয়া, মজার কিন্তু গভীর অর্থবোধক কাহিনী এখানে কুড়িয়ে এনেছেন। এই শিক্ষামূলক
সংগ্রহের অনেক গল্পই হচ্ছে জীবনের-জন্য-সত্য গল্পকথা, যেগুলো আরো গভীর স্মৃতি, প্রজ্ঞা,
ভালোবাসা এবং করুণাবোধে আমাদেরকে উদ্ভাসিত করে। প্রত্যেকটি গল্পে সত্যের তীক্ষ ধার
স্পষ্ট।
আজান
ব্রাহম্ তার সাধুসন্তের মতো বিখ্যাত শিক্ষক আজান চাহ্র প্রজ্ঞায় ভরপুর
শিক্ষাগুলোকেও
সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। থাইল্যান্ডের জঙ্গলে তরুণ জীবনের বছরগুলো তার রসবোধের উর্বর
ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছিল, যেমন উদাহরণস্বরূপ যখন তাকে সারাদিনের জন্য মাত্র একবেলা
খাবার হিসেবে কেবল ভাত ও একটি সেদ্ধ ব্যাঙ খেতে হয়েছিল।
১৯৮৩
সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় একটি বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ শুরু করেছিলেন, যেখানে এখন তিনি বাস
করেন। কিন্তু ভিক্ষুরা তখন এত নিঃস্ব ছিল যে ঘরবাড়ির অভাবে তাকে ফেলে দেওয়া জঞ্জালের
স্তুপ থেকে একটি দরজা কুড়িয়ে এনে বিছানা বানাতে হয়েছিল এবং বাড়ি বানানোর জন্য পাইপলাইন
বসানো ও ইট বিছানোর কাজ শিখতে হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি সর্বস্তরের পশ্চিমা জনগণের কাছে
চিরন্তন বৌদ্ধ দর্শনকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন; অস্ট্রেলিয়ার জেলখানাগুলোতে কয়েদিদেরকে
ভাবনা শিখিয়েছেন; হতাশ, অসুস্থ এবং শোকার্ত মানুষদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দান করেছেন।
এ থেকে যে গল্পগুলো তৈরী হয়েছে, সেগুলো মজাদার এবং জ্ঞানের সিঞ্চনকারী তো বটেই, সাথে
সাথে ভাবনার খোরাকও যোগায়। তীক্ষ রসবোধ এবং প্রজ্ঞার সমন্বয়ে বলা এই গল্পগুলোতে গভীর
বিশ্বাস, নম্রতা ও অধ্যবসায়ের ছাপ পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে। তাছাড়াও এই গল্পগুলো সাধারণ
মানুষের জীবনের অন্তর্দৃষ্টি, ভালোবাসা ও করুণার মুহুর্তগুলোকে প্রকাশিত করেছে।
আশা
ও ভালোবাসা, ক্ষমা, ভয় থেকে মুক্তি এবং ব্যথাকে জয় করার এই আধুনিক গল্পগুলো বুদ্ধের
শিক্ষার সেই চিরন্তন প্রজ্ঞা এবং সত্যিকারের সুখের পথকে খুব দক্ষতার সাথে দেখিয়ে দেয়।
লেখক পরিচিতি
আজান
ব্রহ্মবংশ মহাথেরো (আজান ব্রাহম্) একজন থেরবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু। তার গৃহী নাম পিটার বেটস;
জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ই আগস্ট, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। তিনি ১৯৬০ সালের শেষের দিকে তাত্ত্বিক
পদার্থবিদ্যার উপরে একটি বৃত্তি পান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেমব্রিজ থেকে পদার্থবিদ্যায়
স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে এক বছর একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। এরপর থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান
আজান চাহ-এর কাছে ভিক্ষু হওয়ার জন্য। তিনি নয় বছর ধরে আজান চাহ-এর সাথে থেকে বন ভাবনা
ধারায় প্রশিক্ষণ নেন।
তাকে
অস্ট্রেলিয়ার পার্থে আজান জাগারোকে সাহায্য করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরে সেখানে
১৯৮৩ সালে ৯৭ একর জায়গা নিয়ে বোধিঞান বৌদ্ধবিহারের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার
সবচেয়ে বড় ভিক্ষুসংঘ বসবাস করে এই বিহারে। বর্তমানে তিনি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সার্পেন্টাইনের
বোধিঞান বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার বৌদ্ধ সমাজের আধ্যাত্মিক পরিচালক,
ভিক্টোরিয়ার বৌদ্ধ সমাজের আধ্যাত্মিক উপদেষ্টা, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বৌদ্ধ সমাজের আধ্যাত্মিক
উপদেষ্টা, সিঙ্গাপুরের বৌদ্ধ ভ্রাতৃসংঘের আধ্যাত্মিক পৃষ্ঠপোষক, এবং সিডনির বোধিকুসুম
সেন্টারের আধ্যাত্মিক পৃষ্ঠপোষক।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।