প্রেত দুঃখ কি?

 


যাহারা ইহলোকে কৃপণ, ঈর্ষা মাৎসৰ্যপরায়ণ, নিজেও দান করে না, অপরকেও দান করিতে দেয় না, তাহারা পর স্বীয় পাপ কর্মে প্রেতলোকে জন্ম গ্রহণ করে। শত বৎসর, সহস্র বৎসর, লক্ষ বৎসর, এমন কি এক বৃদ্ধান্তর কল্প কাল পর্যন্ত তথায় তাহাদিগকে বাস করিতে হয়। আহারের জন্য মাত্র তণ্ডুলকণা বা পানাৰ্থ বিন্দুমাত্র জলও তাহারা পায় না। তাহারা ক্ষুৎ-পিপাসায় নিরন্তর দগ্ধ হইতে থাকে।

এই ভাবে ক্ষুধাতৃষ্ণায় প্রপীড়িত হওয়ায় তাহাদের দেহের রক্তমাংস শুকাইয়া , অস্থি , চর্ম স্নায়ুমাত্র অবশিষ্ট থাকে। পৃষ্ঠকণ্টকাবলীর সহিত উদর লাগিয়া থাকে, শরীর পক্ক বাতের ন্যায় ফাটিয়া যায়, কেশ দ্বারা আবৃত মুখমণ্ডল দুর্বর্ণ এবং দেখিতে অতি ভয়ঙ্কর আকৃতি হয়। তাহারা পূৰ্ব্বকৃত পাপের জন্য অনুতাপ করিতে করিতে শীর্ণ দেহে কোন স্থানে পড়িয়া থাকে। তাহাদিগকে পুনঃ পুনঃ দুঃখ প্রদানের নিমিত্তএস, ভোজনকর, পান কর,” এইরূপ মিথ্যা শব্দ তাহাদের শ্রুতিগোচর হয়। তাহারা ইহাকে সত্যবাক্য মনে করিয়া তৃষ্ণাতুর হইয়া উত্থানশক্তিরহিত হইলেও পরস্পরের সাহায্যে উঠিয়া বার বার ভূমিতে পড়িয়া ধাবিত হয়।আমাকে দাও, আমাকে দাওবলিয়া তাহারা অনেক যোজন দৌড়িয়া গেলেও কোন দাতা দেখিতে পায় না। অতঃপর তাহার। মহাদুঃখজনকনাই নাই,” এই শব্দমাত্র শুনিতে পায়। তখন তাহারা ক্ষুধাতৃষ্ণার জ্বলায় রোদন করিতে করিতে কুঠারছিন্ন বৃক্ষের ন্যায় ভূমিতে পড়িয়া থাকে। এইরূপই তাহাদের কর্ম ফল!

তদ্ধেতু উক্ত হইয়াছে-

কিন্ন সোস্সন্তি তে পেত। নত্থি সদ্দং সুদারুণং,

যে হি সন্তেসু দেয্যেসু খিত্তা নখী’তি যাচকা।

পেতলোক ভবং দুখ অনন্তং সন্তজীবিকা,

কত্থন্নু, বণ্নয়ন্তী বিন্দুমত্তং বণ্নিতং 

যাহারা ক্ষিপ্ত হইয়া দাতব্য বস্তু বিদ্যমান সত্বেও বলে, হে যাচক, তোমাকে দিবার, আমার কিছুই নাই, তাহারা প্রেতলোকে জন্ম গ্রহণ করিয়া এই সুদারুণনাইশব্দ কেন শুনিবে না? প্রেতলোকসম্ভূত (যে) অনন্ত দুঃখ তাহা (আমার) সীমাবদ্ধ জীবনে কি প্রকারে বর্ণনা করিব? এখানে সামান্য বর্ণনাই করা হইয়াছে।

পরবর্তী পোষ্ট পেতে চোখ রাখুন “ত্রিশরণে”


সূত্র: সদ্ধর্ম্ম-দীপিকা, প্রথম পরিচ্ছেদ। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

আমাদের ওয়েবসাইট আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকিজ ব্যবহার করে। দয়া করে সম্মতি দিন। Learn More
Accept !