সঞ্জীব
কাল সুত্তো চ সঙ্ঘাতো রোরুবো তথা
মহারোরুব
তাপো চ পতাপো চ অবীচী’চা’তি।
“সঞ্জীব, কালসূত্র, সঙ্ঘাত, রৌরব, মহারৌরব, তাপন, প্রতাপ ও অবীচি, -এই আটটী মহানরক।”
সঞ্জীব নরকঃ প্রথম নরকে পাপিগণ নিদারুণ দুঃখ ভোগ করিতে করিতে মরিয়া পুনঃ জীবিত হয় বলিয়া ইহাকে সঞ্জীব নরক বলে।
কালসূত্র নরকঃ দ্বিতীয় নরকে নরকপালগণ সূত্রধরের কালসূত্র দ্বারা চিহ্ন করণের ন্যায় কুঠারি দিয়া পাপীদিগকে ছেদন করে বলিয়া ইহাকে কালসূত্র নরক বলে।
সংঘাত নরকঃ তৃতীয় নরকে লৌহ-পৰ্বত দ্বারা পাপীদিগকে ঘর্ষণ করে বলিয়া ইহাকে ‘সঙ্ঘাত’ নরক বলা হয়।
আরো পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন>>
·
মনব
জন্ম
· প্রেত দূঃখ কি?
রৌরব নরকঃ চতুর্থ নরকে পাপীদিগের শরীর হইতে রু-রু শব্দে রক্ত ধারা প্রবাহিত হয় এবং রক্তস্রোতে ভাসমান অবস্থায় পাপি গণ দুঃখ পায় বলিয়া ইহাকে রৌরব নরক বলা হয়।
মহারৌরবঃ পঞ্চম নরকে পাপিগণের দেহ হইতে মহাবেগে রক্তধারা প্রবাহিত হয় এবং রক্তস্রোতে ভাসমান অবস্থায় পাপিগণ দুঃখানুভব করে বলিয়া ইহাকে মহারৌরব নরক বলা হয়।
তাপন নরকঃ ষষ্ঠ নরকে পাপীদিগকে একস্থানে স্থিরভাবে রাখিয়া অগ্নিসংযোগে তাপ প্রদান করা হয় বুলিয়া ইহাকে তাপন নরক বলে।
প্রতাপ নরকঃ সপ্তম নরকে মহাগ্নিশিখা দ্বারা পাপিগণ উত্তপ্ত হইতে থাকে বলিয়া ইহাকে মহাতাপন নরক বলা হয়।
অবীচিঃ অষ্টম নরকে অগ্নির বীচি (অন্তর) নাই, নিরন্তর প্রজ্বলিতাগ্নি দ্বারা পাপিগণ জ্বলিতে থাকে, এইজন্য ইহাকে অবীচি নরক বলে।
এই সকল নরকের চারিদিকে চারিদ্বার। ইহাদের ভিত্তি লৌহময় এবং উপরের ছাদও লৌহময়। অভ্যন্তরের উচ্চতা নয় শত যোজন, দৈর্ঘ্য- প্রস্থ শত যোজন। লৌহ-প্রাচীর নয় যোজন পুরু। এই সকল নরকে অগ্নি নিরন্তর প্রজ্জ্বলিত থাকে। তথায় জন্মিয়া প্রাণিগণ অশেষ দুঃখ পাইতে থাকে।
ভগবান্ বলিয়াছেন, “নরকে পতিত প্রাণিগণের দুঃখের সীমা নাই। কল্পকালস্থিত প্রজ্জ্বলিত অনলে পাপিগণ কত যে দুঃখ পায় তাহা অবর্ণনীয়।
“কথন্ন,
বন্নো নিরযেসু দুক্খং,
যুত্তো
মুখানং নহুতেন চা’পি।
কল্পটি্ঠতে
পজ্জলিতে ‘নলস্মিং
বিলীনগতস্স
হি কীব দুক্খং।”
“যে সকল ব্যক্তি
ইহলোকে শ্ৰমণ, ব্রাহ্মণ ও সাধু সৎপুরুষের প্রতি অশ্রদ্ধাবান ও অপ্রসন্ন, কৰ্ম্মফলে
অবিশ্বাসী, মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন, কৃপণ ও মাৎসর্যপরায়ণ, নিষ্করুণ ও কঠিন হৃদয়, পরের
দুঃখ দেখিয়া যাহার চিত্ত ব্যথিত হয় না, যাহার প্রাণীদিগকে বধ, বন্ধন ও হনন করিতে
শঙ্কিত হয় না, পরধন চুরি করে কিংবা জোরপূর্বক গ্রহণ করে, পরস্ত্রীতে আসক্ত হয়, পরের
অনর্থের জন্য মিথ্যা সাক্ষ্য ইত্যাদি প্রদান করে, আফিং, তাড়ি প্রভৃতি যে কোন রকম মাদক
দ্রব্য সেবন, মাতৃহত্যা, পিতৃহত্যা, অহৎহত্যা, বুদ্ধের চরণ হইতে রক্তপাত এবং অসত্যদৃষ্টি
গ্রহণ করে, ত্রিরত্নের প্রতি আক্রোশ প্রকাশ করে ও ত্রিরত্নের নিন্দা করে এবং সর্বদা
অসত্য দৃষ্টিতে বিহার করে, তাহারা রজ্জবদ্ধ গরু-ছাগলের ন্যায় স্বকীয় পাপকর্মে নীত
হইয়া এই অষ্ট মহানরকে উৎপন্ন হয়।
সূত্রঃ সদ্ধর্ম্ম দীপিকা, প্রথম পরিচ্ছেদ।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।