আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথি অতি শুভক্ষণ,
চারি স্মৃতি বিজরিত শোভন মোহন।
এ সময়ে চলে প্রকৃতির খেলা,
বিচিত্র বিধানে হয় চমৎকার লীলা।
মেঘের গম্ভীর ধ্বনি অশনি গর্জন,
বিজলীর আঁকা বাকা প্রভা সুশোভন।
ক্ষণে বৃষ্টি, ক্ষণে রোদ, ক্ষণে মেঘাবৃত,
জলত শীতল বায়ু বহে অবিরত।
নদী ডোবা পুষ্করিনী আর সরোবর,
জলপূর্ণ হয়ে আছে দেখিতে সুন্দর।
সরোজ- কুমুদ কত রয়েছে ফুটিয়া,
মধুকর মধু লোভে যাইতেছে ছুটিয়া।
এহেন পূর্ণিমা যোগে গভীর নিশীতে,
মায়া দেবী স্বপ্ন দেখে অতি হরষিতে।
শ্বেত হস্তী শ্বেতপদ্ম শুণ্ডেতে ধরিয়া,
তিনবার প্রদক্ষিণ রাণীকে করিয়া।
দক্ষিণ পার্শ্বেতে যেন প্রবেশে জঠরে,
সেইক্ষণে বোধিসত্ব মায়ার উদরে।
তুষিত স্বর্গ হতে নেমে এসে ধীরে,
জন্ম নিল জগতের কল্যাণের তরে।
এমন অপর শুভ পূর্ণিমা নিশিতে,
দুঃখের নিরোধ চিন্তা করিতে করিতে।
সংসার নিগড় হতে মুক্তি লাভ তরে,
রাজ্য ধন ত্যাগ করি আকুল অন্তরে।
স্ত্রী-পুত্রের মায়াপাশে করিয়া ছেদন,
অর্ধরাত্রে করিলেন অভিনিস্ক্রমণ।
সিদ্ধার্থের ত্যাগ দেখি দেব-ব্রহ্মগণ,
মহানন্দে সাধুবাদ দেয় ঘনে ঘন।
এরুপ অপরএক পূর্ণিমা তিথিতে,
ভগবান উপনীত হয়ে সারনাতে।
মৃগাদাবে পঞ্চশিষ্যে দীক্ষা প্রদানিয়া,
ধর্মচক্র প্রবর্তন প্রথম দেশিয়া।
জ্ঞানদ্বীপ জানিলেন তাদের অন্তরে,
ইহা দেখি দেব-ব্রহ্মা সাধু ধ্বনি করে।
এমন পবিত্র অন্য মহাশুভক্ষণে,
প্রর্দশিল যমক খদ্ধি শ্রাবস্তী গগণে।
সমাপন করি বুদ্ধ করুণা-অন্তরে,
তখনি গেলেন চলি তাবতিংশ পুরে।
সেইখানে তিনমাস বসি ইন্দ্রাসনে,
মাতাসহ দেবগণে মৈত্রীপূর্ণ মনে।
অভিধর্ম শুনালেন মধুর ভাষণে,
শ্রেষ্ঠ ধর্ম শুণে সবে অতি হৃষ্ট মনে।
এই চারি মহাস্মৃতি রয়েছে জড়িত,
আষাঢ়ী পূর্ণিমা সনে জানিবে নিশ্চিত।
এ পবিত্র দিনে সবে হয়ে একত্রিত,
বুদ্ধাপূজা দানশীলে হয়ে একচিত।
বুদ্ধের আদর্শ নীতি করিয়া পালন,
অচিরে লভিতে যেন পারি মোক্ষধন।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।