হৃদয়ের দরজা খুলে দিন (পর্ব-১৬) চতুর্থ অধ্যায়


চতুর্থ অধ্যায়: রাগ ও ক্ষমা

#একটি ভাবনা কোর্স- ৫৭
আমাদের রাগের বেশির ভাগ অংশই জ্বলে ওঠে অন্যায্য আশা থেকে। মাঝে মাঝে আমরা নিজেদেরকে এমনভাবে ঢেলে দিই যে, যখন কোনকিছু যেমনটা হওয়া উচিত, তেমনটা হয় না, তখন আমরা জ্বলে উঠি। সবরকম ‘উচিতগুলো নির্দেশ করে আশাকে, যা হচ্ছে ভবিষ্যতের অনুমান। আমরা হয়তো এতক্ষণে বুঝে গেছি যে ভবিষ্যত অনিশ্চিত, অনুমান করে বলার মতো নয়। ভবিষ্যতের আশা বা উচিত-এর উপরে খুব বেশি নির্ভর করা মানে হচ্ছে ঝামেলাকে ডেকে আনা।
অনেক বছর আগে আমি একজন পশ্চিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে চিনতাম যে দূরপ্রাচ্যের কোন দেশে একজন ভিক্ষু হয়েছিল। সে এক দুর্গম পাহাড়ের উপরে অবস্থিত কড়া নিয়মের অধীনে পরিচালিত এক ভাবনাকেন্দ্রে যোগ দিল। প্রতি বছর তারা ষাট দিনের এক ভাবনা কোর্স করতো। এটি ছিল কঠিন, কড়া শৃঙ্খলার অধীন এবং দুর্বলমনাদের জন্য নয়।

তারা রাত ৩.০০টায় ঘুম থেকে উঠত। ৩.১০ মিনিটে সবাই ধ্যানে বসে যেত। পুরো দিনের রুটিন ছিল- পঞ্চাশ মিনিট ধ্যান, দশ মিনিট চংক্রমণ, পঞ্চাশ মিনিট ধ্যান, দশ মিনিট চংক্রমণ এভাবে চলত। যে হলরুমে বসে তারা ধ্যান করত, সেখানেই খাবার খেয়ে নিতে হতো। কোন কথাবার্তা চলত না। রাত ১০.০০টায় তারা শুয়ে পড়তে পারত, কিন্তু সেটা সেই হলরুমেই, যেখানে বসে ধ্যান করত ঠিক সে জায়গায়। ৩.০০টায় ঘুম থেকে ওঠা ছিল অপশনাল ব্যাপার, আপনি যদি চান তারও আগে উঠতে পারবেন, কিন্তু তার পরে নয়। মাঝখানে ব্রেক ছিল কেবল তাদের ভয়ংকর গুরুর সাথে প্রশ্নোত্তর পর্বের সময়। আর অবশ্যই ছিল সংক্ষিপ্ত টয়লেট ব্রেক।           
তিনদিন পরে পশ্চিমা ঐ ভিক্ষুর পা ও পিঠে খুব ব্যথা হলো। সে এভাবে বসে থাকতে অভ্যস্ত ছিল না। একজন পশ্চিমার জন্য এভাবে বসে থাকাটা ছিল খুব অস্বস্তিকর। তাছাড়াও কোর্স শেষ হওয়ার এখনো আট সপ্তাহ বাকি আছে এখনো। তার সন্দেহ দেখা দিল, এত লম্বা ভাবনা কোর্সে টিকে থাকতে পারবে কিনা।
প্রথম সপ্তাহ শেষে অবস্থার কোন উন্নতি হলো না। এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে সে প্রায়ই ব্যথায় কাতরাতো। যাদের দশ দিনের ভাবনা কোর্সে যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে, তারা বুঝবে কেমন ব্যথা লাগে। তাকে আরো সাড়ে সাত সপ্তাহ সহ্য করতে হবে।
এই লোকটা ছিল কঠিন ধাতের। সে তার সবটুকু শক্তি একত্র করল আর প্রত্যেকটা সেকেন্ড গুণে গুণে সহ্য করল। দুই সপ্তাহ শেষে তার মনে হলো, যথেষ্ট হয়েছে। ব্যথা বেড়েছে খুব বেশি। এমন ব্যবস্থায় তার পশ্চিমা দেহ অভ্যস্ত নয়। এটা বৌদ্ধ ধর্ম নয়। এটা মধ্য পথ নয়। এরপর সে আশেপাশে অন্যান্য এশিয়ান ভিক্ষুদেরকে দেখল, তারাও দাঁতমুখ খিঁচে বসে আছে। জেদ তাকে আরো দুসপ্তাহ কাটাতে সাহায্য করল। এসময় তার মনে হলো দেহটা যেন ব্যথার আগুনে সেঁকা হচ্ছে। দম ফেলার ফুরসত মিলত কেবল রাত ১০.০০টার ঘন্টায়, যখন সে একটু শুয়ে পড়ে তার নির্যাতিত দেহকে একটু বিশ্রাম দিতে পারতো। কিন্তু মনে হতো যেন ঘুমিয়ে পড়ার আগেই সকাল ৩.০০টার ঘন্টা বেজে উঠেছে। আরেকটি নতুন দিনে নিপীড়নে জর্জরিত হওয়ার জন্য সে জেগে উঠতো। ত্রিশতম দিনের শেষে যেন নিভু নিভু আশার বাতি জ্বলে উঠল বহু দূরে। সে এখন অর্ধেক পথ পেরিয়ে এসেছে। সে এখন নিজেকে নিজে বুঝাতে পারে, ‘এই তো পৌঁছে গেছি। দিনগুলো দিন দিন আরো দীর্ঘ হলো, আর তার হাঁটু ও পিঠের ব্যথা তীক্ষ্ন থেকে তীক্ষ্নতর হলো। মাঝে মাঝে মনে হতো সে কেঁদে ফেলবে। তবুও সে ঠেলেঠুলে নিজেকে এগিয়ে নিল। আরো দুসপ্তাহ। আরো এক সপ্তাহ। সেই শেষ সপ্তাহে সময় এমনভাবে টেনে টেনে কাটতে লাগল যেন পানির ধারায় আটকে যাওয়া পিপড়ার মতো। যদিও এখন সে ব্যথা সহ্য করতে অভ্যস্ত, তবুও তা আগের চাইতে সহজ ছিল না মোটেও। সে ভাবলো, এখন হাল ছেড়ে দেওয়া মানেই হলো, এতদিন ধরে এত কষ্ট সে করেছে, তার প্রতি অবিচার করা হবে। সে এটার শেষ দেখেই ছাড়বে, এতে যদি মরতে হয় তো মরবে। মাঝে মাঝে সত্যিই ভাবতো সে মারা যাচ্ছে!
ষাটতম দিনে সকাল তিনটার ঘন্টায় সে জেগে উঠল। প্রায় পৌঁছে গেছে সে। শেষদিনের ব্যথা ছিল অসহনীয়। এতদিন পর্যন্ত ব্যথা যেন সামান্য মজা করছিল তাকে নিয়ে, কিন্তু এখন এটি কোন ঘুষিই বাদ রাখছে না। যদিও শেষ হবার আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি, তার সন্দেহ হলো, সে এটা শেষ করতে পারবে কিনা। এরপর আসলো সর্বশেষ পঞ্চাশ মিনিট। সেই এই সর্বশেষ ধ্যান শুরু করলো কল্পনা নিয়ে। এক ঘন্টা পরে ভাবনা কোর্স শেষ হলে সে কী কী করবে, গরম পানিতে একটা লম্বা গোসল, আয়েশী খানা, কথা বলা, গল্পগুজব- ব্যথা এসে তার পরিকল্পনায় বার বার ব্যঘাত ঘটালো, তার মনকে সেদিকে দিতে বাধ্য করলো। সে তার চোখ সামান্য খুলে চুপি চুপি কয়েকবার ঘড়ির দিকে তাকালো। সে বিশ্বাসই করতে পারলো না সময় কেন এত ধীরে ধীরে যায়। ঘড়ির ব্যাটারিগুলো কি পাল্টানো দরকার নাকি? ভাবনা কোর্স শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগেই হয়তো ঘড়িটা বন্ধ হয়ে সেখানেই থেমে যাবে চিরকালের জন্য? শেষ পঞ্চাশ মিনিট যেন পঞ্চাশ যুগ বলে মনে হলো। কিন্তু মহাকালেরও শেষ আছে। আর তাই এটিও শেষ হলো একসময়। মিষ্টি সুরে ভাবনা কোর্সের সমাপ্তিসূচক ঘন্টা বেজে উঠলো।
আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল তার সারা শরীর জুড়ে। ব্যথাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল অনেক দূরে। সে পেরেছে। সে এখন নিজেকে একটু পরিচর্যা করবে। গোসলখানা কই?
ভাবনা গুরু আবার ঘন্টা বাজিয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। ‘একটা ঘোষণা’,  তিনি বললেন, ‘এটি সত্যিই অসাধারণ একটি ভাবনা কোর্স ছিল। অনেক ভিক্ষুর অগ্রগতি খুব ভালো হয়েছে। আর তাদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত প্রশ্নোত্তর পর্বে আমাকে পরামর্শ দিয়েছে যে, ভাবনাকোর্সের মেয়াদ আরো দুসপ্তাহ বাড়ানো উচিত। আমি মনে করি এটা একটা চমৎকার আইডিয়া। ভাবনা কোর্সের মেয়াদ বাড়ানো হলো। ধ্যান করতে থাকো সবাই।
সব ভিক্ষু আবার তাদের পা ভাঁজ করে নিথর হয়ে ধ্যানে বসে পড়ল, আরো দুসপ্তাহের জন্য। পশ্চিমা ভিক্ষুটি আমাকে বলেছিল যে, সে আর দেহে কোন ব্যথা অনুভব করছিল না। সে শুধু নির্ণয় করার চেষ্টা করছিল, কারা সেই হতভাগা ভিক্ষু, যারা এই মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে, আর ভাবছিল, একবার খুঁজে পেলে সে তাদেরকে নিয়ে কী করবে! সেই অবিবেচক ভিক্ষুদের জন্য সবচেয়ে অভিক্ষুসুলভ বিভিন্ন প্ল্যান করতে লাগলো সে।
তার রাগ যেন পুরনো সব ব্যথাকে শুষে নিয়েছিল। সে রাগে জ্বলছিল। সে যেন খুনের নেশায় মাতাল। এমন রাগ তার আগে কখনো হয় নি। এরপর আবার ঘন্টা বাজলো। এটা ছিল তার জীবনের সবচেয়ে স্বল্পমেয়াদী পনেরো মিনিট।
’ভাবনা কোর্স সমাপ্ত। গুরু ঘোষণা করলেন, ‘তোমাদের সবার জন্য খাবার প্রস্তুত আছে ক্যান্টিনে। সবাই বিশ্রাম নাও। তোমরা এখন কথা বলতে পারো।
পশ্চিমা ভিক্ষুটি বিমূঢ় হয়ে গেল। ‘আমি তো ভেবেছি আরো দুসপ্তাহ ধ্যান করতে হবে। হচ্ছেটা কী?’ একজন ইংরেজী জানা সিনিয়র ভিক্ষু তার বিমূঢ় ভাব লক্ষ করে তার দিকে এগিয়ে এল। হেসে সে পশ্চিমা ভিক্ষুটিকে বললো, ‘চিন্তা করো না! গুরু এরকম করে থাকেন প্রতি বছর!’

#রাগ খেকো দানব- ৬০
রাগ নিয়ে একটা সমস্যা হলো আমরা রেগে যাওয়াটা উপভোগ করি। রাগ দেখানোর সাথে কেমন জানি একটা মাদকতা জড়ানো থাকে। অন্য ধরনের বন্য আনন্দ কাজ করে। যাতে আনন্দ থাকে, তাকে আমরা উপভোগ করি, তাকে আমরা যেতে দিতে চাই না। তবে রাগ দেখানোতে বিপদও আছে। রাগ দেখানোর ফল এই আনন্দের চেয়েও ভারী হয়ে চেপে বসে। যদি আমরা রাগের ফল উপলদ্ধি করতাম, তাহলেই আমরা রাগকে সানন্দে যেতে দিতে রাজি হতাম।
অনেক অনেক আগে কোন এক জগতে এক রাজ প্রাসাদে এক দানব প্রবেশ করল। সেসময় রাজা কী একটা কাজে বাইরে ছিলেন। দানবটি দেখতে এমন কুৎসিত, গা থেকে এমন দুর্গন্ধ বের হয়, আর তার কথাবার্তাও এমন বিশ্রী যে রাজপ্রাসাদের সৈন্যসামন্ত, কর্মচারী সবাই ভয়ে কাঠ। এই সুযোগে সে বাইরের রুমগুলো পেরিয়ে রাজদরবারে গিয়ে সোজা রাজসিংহাসনে বসে পড়ল। তাকে সেখানে বসতে দেখে সৈন্যসামন্ত ও অন্যান্যদের হুঁশ ফিরে এল।
‘বেরোও ওখান থেকে!’ তারা চিৎকার করে বললো, ‘তোমার জায়গা ওখানে নয়! এখুনি যদি তোমার পাছা ওখান থেকে না সরাও তো তলোয়ার দিয়ে গুঁতিয়ে ওটাকে বের করে দেব আমরা।
এই কয়েকটি রাগের কথায় দানবটি কয়েক ইঞ্চি বড় হয়ে গেল, তার চেহারা আরো কদাকার হলো, দুর্গন্ধ আরো তীব্র হলো, কথাবার্তা আরো অশ্লীল হয়ে উঠলো।
তলোয়ার উঁচিয়ে ধরা হলো, ছোরা বের করা হলো খাপ থেকে, অনেক হুমকি ধামকি দেওয়া হলো। প্রত্যেকটি রাগের কথায়, কাজে, এমনকি প্রত্যেকটি রাগমূলক চিন্তায় দানবটি একইঞ্চি করে বাড়ল, আরো বিশ্রী চেহারা হলো, দুর্গন্ধ আরো বাড়লো, কথাবার্তা আরো অশ্রাব্য হয়ে উঠলো।
এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর রাজা ফিরলেন। তিনি তার আসনে এক বিশালকায় দানবকে বসে থাকতে দেখলেন। এমন জঘন্য ও কুৎসিত কোন কিছু আগে কখনো দেখেননি তিনি, এমনকি কোন ফিল্মেও নয়। দানবটার গায়ের দুর্গন্ধে কৃমিও অসুস্থ হয়ে পড়বে। তার কথাবার্তা শুঁড়িখানার মাতালদের গালিকেও হার মানাবে।
রাজা কিন্তু জ্ঞানী ছিলেন। এজন্যই তো তিনি রাজা। তিনি জানতেন কী করতে হবে। রাজা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন, ‘স্বাগতম, স্বাগতম আমার প্রাসাদে। আপনাকে কেউ কী পানীয় টানীয় কিছু দিয়েছে ইতিমধ্যে? অথবা কোন খাদ্য ভোজ্য?’
এমন দয়ালু আচরণে দানবটি কয়েক ইঞ্চি ছোট হয়ে গেল, বিশ্রী ভাব একটু কমল, দুর্গন্ধ একটু কমে গেল, কথাবার্তা আগের থেকে কম অশ্লীল শোনালো। প্রাসাদের লোকজন দ্রুত ব্যাপারটা ধরতে পারলো। একজন দানবটিকে জিজ্ঞেস করল, তার এক কাপ চা লাগবে কিনা। ‘আমাদের আছে দার্জিলিংয়ের চা, ইংলিশ চা, অথবা আপনি যদি চান তো আর্ল গ্রে চা। নাকি পেপারমিন্ট দেব? এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে।আরেকজন ফোনে পিৎসার অর্ডার দিল। যেন তেন পিৎসা নয়, এমন বড় দানবের জন্য বড়সড় ফ্যামিলি সাইজের পিৎসা। অন্যরা স্যান্ডউইচ বানিয়ে দিল মাংসের ভুনা দিয়ে। একজন সৈন্য দানবটির পা মালিশ করে দিল, আরেকজন তার ঘাড়ের আঁশগুলো চুলকে দিল। ‘উম্ ম্ ম্! কী দারুণ!’ ভাবলো দানবটা।
প্রত্যেকটি দয়ার কথায়, কাজে বা চিন্তায় সেটি আরো ছোট হলো, আরো কম কুৎসিত হলো, আরো কম দুর্গন্ধ ছড়ালো, আরো কম অশ্লীল কথাবার্তা আওড়ালো। পিৎসা নিয়ে আসার আগেই সে আগের সাইজে ফিরে আসলো। কিন্তু তাই বলে অন্যরা ভালো আচরণ করা বন্ধ করলো না। শীঘ্রই দানবটির সাইজ এমন ছোট হয়ে গেল যে তাকে দেখতে পাওয়াই দায়! পরিশেষে আরো একটা দয়ার কাজের পরেই সে পুরোপুরি মিলিয়ে গেল।
আমরা এমন দানবকে বলি ‘রাগখেকো দানব
আপনার সঙ্গী হয়তো মাঝে মধ্যে এমন রাগখেকো দানবে পরিণত হতে পারে। আপনি তাদের সাথে রাগ করলে তারা আরো খারাপ, আরো কুৎসিত, আরো বেশি দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং কথাবার্তা আরো অশ্রাব্য হয়ে ওঠে। প্রত্যেক রাগের কথায় সমস্যাটা আরো বড় হয়, এমনকি রাগের চিন্তা করলেও। বোধহয় এখন আপনি আপনার ভুল বুঝতে পেরেছেন আর জেনে গেছেন কী করতে হবে।
ব্যথাও আরেকটা রাগখেকো দানব। যখনই আমরা রাগের চোটে ভাবি, ‘ব্যথা! বেরোও এখান থেকে! তোমার এখানে কোন জায়গা নেই!’ তখন ব্যথা আরেকটু বড় হয়, অবস্থা আরেকটু খারাপ হয়। ব্যথার মতো এমন জঘন্য ও বিশ্রী কোন কিছুর প্রতি দয়া দেখানো কঠিন কিন্তু জীবনে মাঝে মাঝে এমন সময় আসে যখন আমাদের হাতে অন্য কোন উপায় থাকে না। আমার দাঁতের ব্যথার গল্পের মতো, যখন আমরা ব্যথাকে সত্যি সত্যিই আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই, এটি কমতে থাকে। সমস্যা হাল্কা হয়ে ওঠে আর মাঝে মাঝে পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়।
কিছু কিছু ক্যান্সারও রাগখেকো দানবের মতো। কুৎসিত ও বমি উদ্রেককারী এই দানবগুলো আমাদের দেহে, আমাদের সিংহাসনে বাস করে। এটা বলা স্বাভাবিক, ‘বেরোও এখান থেকে! এটা তোমার জায়গা নয়!’ যখন সবকিছু ব্যর্থ, অথবা তারও আগে আগে আমরা বলতে পারি, ‘স্বাগতম। কিছু কিছু ক্যান্সার আছে যেগুলো দুশ্চিন্তাকে খেয়ে খেয়ে বেড়ে ওঠে, এজন্যই এগুলো ‘রাগ খেকো দানব। এ ধরনের ক্যান্সার ভালো সাড়া দেয় যখনপ্রাসাদের রাজা সাহসের সাথে বলে, ‘হে ক্যান্সার, আমার হৃদয়ের দরজা তোমার জন্য পুরোপুরি খোলা, তুমি যাই করো না কেন। এসো, ভেতরে এসো!’
                                         
                                                                                                                               ------------------চলমান

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

আমাদের ওয়েবসাইট আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকিজ ব্যবহার করে। দয়া করে সম্মতি দিন। Learn More
Accept !