ষষ্ঠ অধ্যায়: কঠিন সমস্যা ও মৈত্রীময় সমাধান
#সিদ্ধান্ত
নেওয়া- ৯৭
সমাধান আছে এমন সমস্যার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত
নেওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো আমরা কীভাবে নিই?
সাধারণত আমরা আমাদের কঠিন সিদ্ধান্তগুলো
অন্য কাউকে দিয়ে নেওয়ানোর চেষ্টা করি। যদি কোন ঝামেলা হয়, তখন দোষারোপ করার জন্য একজনকে
পাই। আমার বন্ধুদের মধ্যে কয়েকজন আমাকে এমন ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে, যাতে তাদের সিদ্ধান্তগুলো
আমিই নিয়ে দিই, কিন্তু আমি দেব না। আমি যা করি তা হলো, কীভাবে তারা বিজ্ঞতার সাথে সিদ্ধান্ত
নিতে পারে তা দেখিয়ে দেব।
যখন আমরা কোন চৌরাস্তার মোড়ে এসে দ্বিধায়
ভুগি কোনদিকে যাব, তখন আমাদের গাড়িটা একপাশে থামানো উচিত আর একটু বিশ্রাম নিয়ে বাসের
জন্য অপেক্ষা করা উচিত। শীঘ্রই, সাধারণত আমরা যখন এর আশা করি না তখন, একটা বাস আসে।
বাসের সামনে বড় বড় করে লেখা থাকে এটি কোথায় যাচ্ছে। যদি সেই গন্তব্য আপনার উপযোগী হয়,
উঠে পড়ুন সেই বাসে। না হলে অপেক্ষা করুন। পিছনে সবসময় আরো বাস থাকে।
অন্য কথায়, যখন আমাদের একটা সিদ্ধান্ত
নেওয়ার প্রয়োজন হয় আর আমরা সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দোটানায় পড়ে যাই, আমাদের দরকার একপাশে
গিয়ে একটু অপেক্ষা করা। শীঘ্রই, যখন আপনি এর আশা করছেন না তখন, একটা সমাধান আসবে। প্রত্যেক
সমাধানের একটা নির্দিষ্ট গন্তব্য থাকে। যদি সেই গন্তব্য আমাদের উপযোগী না হয়, তাহলে
আমরা সেটা নিই, নাহলে আরো অপেক্ষা করি। এর পেছনে সবসময়ই আরেকটা সমাধান থাকে।
এভাবেই আমি সিদ্ধান্ত নিই। আমি সব তথ্যউপাত্ত
জড়ো করি আর সমাধানের অপেক্ষায় থাকি। ভালো কোন সিদ্ধান্ত সবসময়ই আসবে, যদি আমি ধৈর্য্যশীল
হই। এটা সাধারণত অপ্রত্যাশিতভাবে আসে, যখন আমি এটা নিয়ে ভাবছি না, তখন।
#অন্যদের
দোষারোপ করা- ৯৮
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময়
আপনি আগের গল্পে উক্ত নিয়মটা প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। কিন্তু এমন নয় যে এই পদ্ধতিটাই
আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত তো আপনারই হাতে। তাই এটা যদি কাজে না দেয়,
আমাকে দোষ দেবেন না যেন।
এক
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আমাদের এক ভিক্ষুর সাথে দেখা করতে এলো। সেই ছাত্রীটির এর পরের
দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পরীক্ষা ছিল। আর তাই সে চাচ্ছিল যেন ভিক্ষুটি তার জন্য মঙ্গল
সূত্র পাঠ করে দেয়, যাতে তার সৌভাগ্য আসে। ভিক্ষুটি সদয় সম্মতি দিল এই ভেবে যে এতে
হয়তো ছাত্রীটি আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে।এটি ছিল বিনামূল্যে। ছাত্রীটি কোন কিছু দান করে
নি।
আমরা আর সেই তরুণীটিকে দেখি নি। কিন্তু
তার বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে শুনলাম, সে নাকি বলে বেড়াচ্ছে যে আমাদের বিহারের ভিক্ষুরা
কোন কাজের নয়। তারা মঙ্গল সূত্রও ভালোমতো পাঠ করতে জানে না। সে তার পরীক্ষায় ফেল করেছিল।
তার বন্ধুবান্ধবরা আমাদেরকে বলেছে যে
সে ফেল করেছে, কারণ সে বলতে গেলে কোন পড়াশোনাই করে নি। সে ছিল একজন পার্টি গার্ল, অর্থাৎ
খাও দাও ফুর্তি করো টাইপের মেয়ে। সে আশা করেছিল যে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তার জন্য কম
গুরুত্বপূর্ণ যে কাজ পড়াশোনাটা, সেটা ভিক্ষুরা দেখবে।
জীবনে কোন কিছু ভুল হয়ে গেলে অন্যকে দোষারোপ
করে হয়তো সাময়িক স্বস্তি মেলে, কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয় কদাচিৎ।
এক ব্যক্তির চুলকানি ছিল পাছায়, সে চুলকাল
মাথা। তাই তার চুলকানি কখনোই গেল না। অন্যকে দোষারোপ করার ব্যাপারটাকে আজান চাহ্ এভাবেই
বলেছেন। এটা যেন চুলকানি আপনার পাছায়, আপনি চুলকাচ্ছেন মাথায়।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।