নবম অধ্যায়: মূল্যবোধ ও আধ্যাত্মিক জীবন
#যখন
আমার সব ইচ্ছে পূর্ণ হবে- ১৫০
আমার ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা
টাকা গ্রহণ, রাখা বা লেনদেন করতে পারে না, তা সে যেধরনেরই হোক। আমরা এত গরীর যে সরকারের
পরিসংখ্যান আমাদের কারণে তালগোল পাকিয়ে যায়।
আমরা মিতব্যয়ী হয়ে চলি, গৃহী সমর্থকদের
কাছ থেকে যে সামান্য দান পাই, তাও আমরা মুখ ফুটে চাইতে পারি না। কালে ভদ্রে অবশ্য বিশেষ
কিছু দান দেওয়া হয় আমাদেরকে।
আমি এক থাই লোককে তার ব্যক্তিগত সমস্যা
বিষয়ে সাহায্য করেছিলাম। কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সে বললো, ‘স্যার, আমি আপনাকে কিছু একটা দিতে
চাই আপনার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য। পাঁচশ বাথের মধ্যে আমি আপনার জন্য কী কিনে দিতে
পারি?’ এমন দান দেওয়ার সময় টাকার অংকটা বলা স্বাভাবিক, এতে করে ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো
যায়।
আমি তৎক্ষণাৎ ভেবে বের করতে পারলাম না
আমি কী চাই। সেও বেশ তাড়ার মধ্যে ছিল তাই আমি বললাম, পরের দিন সকালে আমি তাকে জানাব।
সে রাজি হলো।
এই ঘটনার আগে আমি ছিলাম একজন ছোট্ট সুখী
সন্ন্যাসী। এখন আমি ভাবতে শুরু করলাম আমি কী চাই। আমি একটা তালিকা তৈরী করলাম, তালিকাটা
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হলো। পরে দেখা গেল, পাঁচশ বাথে কুলোচ্ছে না। তালিকা থেকে কিছু একটা
যে বাদ দেব, তারও উপায় নেই। চাওয়াগুলো যেন হঠাৎ আবির্ভূত হয়ে প্রয়োজনের রূপ ধরে অনড়
হয়ে বসে আছে! তালিকাটা বাড়তেই থাকল। একসময় পাঁচ হাজার বাথেও কুলাল না।
কী হচ্ছে দেখে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম তালিকাটা।
পরের দিন আমি সেই সমর্থককে বললাম সে যেন পাঁচশ বাথ বৌদ্ধ বিহার উন্নয়নের কাজে অথবা
অন্য কোন ভালো কাজে দান করে দেয়। আমি ওগুলো চাই না। আমি সবচেয়ে যা চাই তা হলো গতকালের
আগের দিন আমার যে সন্তুষ্টি ছিল তা আমি ফিরে পেতে চাই। যখন আমার কোন টাকা ছিল না, কোন
কিছু পাওয়ারও উপায় ছিল না, তখনই আমার সব আশা পূর্ণ হয়েছিল।
চাওয়ার কোন শেষ নেই। একশ কোটি বাথেও কুলায়
না। কুলায় না একশ কোটি ডলারেও। কিন্তু চাওয়া থেকে মুক্তির একটা শেষ আছে । আপনি যখন
কিছুই চান না, তখনই এর শেষ। কেবল সন্তুষ্টির সময়ই আপনি বলতে পারেন, আপনার যথেষ্ট আছে।
------------নবম অধ্যায় শেষ------------
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।