Mohabir |
জৈনধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মহাবীর। মহাবীর গৌতম বুদ্ধের সমসময়ীক ছিলেন কাজেই বৌদ্ধ ধর্মও জৈনধর্মের মধ্যে কিছুটা সমঞ্জস্য ছিল। তবে জৈনধর্মের বিভিন্ন বিষয়ের সাথে বুদ্ধ দ্বি-মত পোষণ করতেন।
জৈনধর্ম সম্বন্ধে উপালি গৃহপতির সঙ্গে বুদ্ধের যে কথোপকথন হয় তাহাতে দেখা যায়, জৈনমতে মানসিক কর্ম অপেক্ষা কায়িক কর্মে বেশী গুরুত্ব আরোপ করা হইয়াছে। কারণ জৈন দার্শনিকদের মতে প্রাণীহত্যায় যত পাপ, প্রাণীহত্যার চিন্তায় তত পাপ নাই। বুদ্ধদেব তাঁহাদের সঙ্গে একমত হইতে পারেন নাই। কারণ অনেক সময় মানুষের অনিচ্ছাকৃত প্রাণীহত্যাও সংঘটিত হইতে পারে এবং সেইজন্য হত্যাকারীকে পাপী বলা যায় না।
“মনোপুব্বংগমা ধম্মা মনোসেট্ঠা মনোময়া” এই উক্তি দ্বারা বুদ্ধদেব বলেন যে, সমস্ত কার্য করিবার পূর্বে মন ক্রিয়াশীল হয়। সুতরাং মানসিক কর্মকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই মনোভাব লইয়াই বুদ্ধদেব ভিক্ষুদের মাংসভক্ষণ পর্যন্ত, নিষিদ্ধ করেন নাই।
তিনি নির্দেশ দিয়াছেন যে, যদি ভিক্ষুরা অদৃষ্ট, অশ্রুত, অচিন্তিত ও অনুদ্দিষ্ট মাংস ভক্ষণ করেন তাহাতে আপত্তি নাই। মধ্যম নিকায়ের পঞ্চান্ন সংখ্যক সূত্রে উপাসক জীবক এই প্রশ্ন উত্থাপন করিয়াছিলেন। ইহার উত্তরে বুদ্ধদেব বলিয়াছিলেন যে, তাঁহার শিষ্যেরা সকলেই মৈত্রী, করুণা, মুদিতা ও উপেক্ষা এই চারিটি ব্রহ্মবিহারের সাধনা করেন। সুতরাং তাঁহাদের পক্ষে প্রাণীহত্যা করিয়া তাহার মাংস ভক্ষণ অসম্ভব।
“মনোকম্ম”কে প্রধান্য দেওয়াতে বুদ্ধদেব জৈন মতবাদকে গ্রহণ করেন নাই। এই কায়কর্ম্মের উপর গুরুত্ব আরোপ করায় জৈন আচার্যেরা কায়িক সংযমের জন্য যে প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা দিয়াছেন। তাহা অতি কঠোর এবং বুদ্ধদেবের মতে নিষ্ফল।
কয়েকটি সূত্রে জৈন ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীদের মধ্যে কায়িক সংযমের জন্য যে সমস্ত কঠোর ব্যবস্থা ছিল তাহার নমুনা স্বরূপ তালিকা কয়েকটি সূত্রে দেওয়া আছে। এই তালিকা হইতে বেশ প্রতীয়মান হয় যে, সন্ন্যাসীরা কঠোর সাধনা দ্বারা এই জন্মে কষ্ট পায় এবং পরজন্মেও তাহার দরুণ কোন সুফল হয় না।
বুদ্ধদেব ইহাই লক্ষ্য করিয়া তাঁহার “মধ্যপথের” নির্দেশ দিয়াছিলেন। তাঁহার মতে চিত্তকে নিষ্কলুষ না করিয়া কেবলমাত্র শারীরিক সংযমে কোন সুফল হয় না। ঊর্ধ্ববাহু বা কণ্টক শয্যাশায়ী সন্ন্যাসীর চিত্তে যদি অনুরাগ, হিংসা ও মোহ থাকে তাহা হইলে তাহার কৃচ্ছ্রসাধনার কোন ফল নাই।
অনর্থক শারীরিক কষ্ট সহ্য করা মাত্র। ভগবান বুদ্ধ নিজে এই কৃচ্ছ্র সাধনার চরমে গিয়াছিলেন এবং উহাতে তিনি সিদ্ধিলাভ করিতে পারেন নাই। সেইজন্য তিনি ‘মধ্যপথের’ নির্দেশ দিয়াছিলেন।
জৈন ধর্মমত
জৈনধর্ম সম্বন্ধে উপালি গৃহপতির সঙ্গে বুদ্ধের যে কথোপকথন হয় তাহাতে দেখা যায়, জৈনমতে মানসিক কর্ম অপেক্ষা কায়িক কর্মে বেশী গুরুত্ব আরোপ করা হইয়াছে। কারণ জৈন দার্শনিকদের মতে প্রাণীহত্যায় যত পাপ, প্রাণীহত্যার চিন্তায় তত পাপ নাই। বুদ্ধদেব তাঁহাদের সঙ্গে একমত হইতে পারেন নাই। কারণ অনেক সময় মানুষের অনিচ্ছাকৃত প্রাণীহত্যাও সংঘটিত হইতে পারে এবং সেইজন্য হত্যাকারীকে পাপী বলা যায় না।
“মনোপুব্বংগমা ধম্মা মনোসেট্ঠা মনোময়া” এই উক্তি দ্বারা বুদ্ধদেব বলেন যে, সমস্ত কার্য করিবার পূর্বে মন ক্রিয়াশীল হয়। সুতরাং মানসিক কর্মকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই মনোভাব লইয়াই বুদ্ধদেব ভিক্ষুদের মাংসভক্ষণ পর্যন্ত, নিষিদ্ধ করেন নাই।
তিনি নির্দেশ দিয়াছেন যে, যদি ভিক্ষুরা অদৃষ্ট, অশ্রুত, অচিন্তিত ও অনুদ্দিষ্ট মাংস ভক্ষণ করেন তাহাতে আপত্তি নাই। মধ্যম নিকায়ের পঞ্চান্ন সংখ্যক সূত্রে উপাসক জীবক এই প্রশ্ন উত্থাপন করিয়াছিলেন। ইহার উত্তরে বুদ্ধদেব বলিয়াছিলেন যে, তাঁহার শিষ্যেরা সকলেই মৈত্রী, করুণা, মুদিতা ও উপেক্ষা এই চারিটি ব্রহ্মবিহারের সাধনা করেন। সুতরাং তাঁহাদের পক্ষে প্রাণীহত্যা করিয়া তাহার মাংস ভক্ষণ অসম্ভব।
“মনোকম্ম”কে প্রধান্য দেওয়াতে বুদ্ধদেব জৈন মতবাদকে গ্রহণ করেন নাই। এই কায়কর্ম্মের উপর গুরুত্ব আরোপ করায় জৈন আচার্যেরা কায়িক সংযমের জন্য যে প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা দিয়াছেন। তাহা অতি কঠোর এবং বুদ্ধদেবের মতে নিষ্ফল।
কয়েকটি সূত্রে জৈন ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীদের মধ্যে কায়িক সংযমের জন্য যে সমস্ত কঠোর ব্যবস্থা ছিল তাহার নমুনা স্বরূপ তালিকা কয়েকটি সূত্রে দেওয়া আছে। এই তালিকা হইতে বেশ প্রতীয়মান হয় যে, সন্ন্যাসীরা কঠোর সাধনা দ্বারা এই জন্মে কষ্ট পায় এবং পরজন্মেও তাহার দরুণ কোন সুফল হয় না।
বুদ্ধদেব ইহাই লক্ষ্য করিয়া তাঁহার “মধ্যপথের” নির্দেশ দিয়াছিলেন। তাঁহার মতে চিত্তকে নিষ্কলুষ না করিয়া কেবলমাত্র শারীরিক সংযমে কোন সুফল হয় না। ঊর্ধ্ববাহু বা কণ্টক শয্যাশায়ী সন্ন্যাসীর চিত্তে যদি অনুরাগ, হিংসা ও মোহ থাকে তাহা হইলে তাহার কৃচ্ছ্রসাধনার কোন ফল নাই।
অনর্থক শারীরিক কষ্ট সহ্য করা মাত্র। ভগবান বুদ্ধ নিজে এই কৃচ্ছ্র সাধনার চরমে গিয়াছিলেন এবং উহাতে তিনি সিদ্ধিলাভ করিতে পারেন নাই। সেইজন্য তিনি ‘মধ্যপথের’ নির্দেশ দিয়াছিলেন।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।