বুদ্ধ জয়ন্তী ২৫৬৯: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণদের হৃদয়ে জাগলো শান্তির প্রদীপ
গত ২০ জুন ২০২৫, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ও প্রজ্ঞাময় পরিবেশে উদযাপিত হলো শুভ বুদ্ধ জয়ন্তী ২৫৬৯। এই আয়োজনে ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং তরুণদের মাঝে মানবতা, করুণা এবং বুদ্ধের অসীম দয়ার বাণীকে হৃদয়ে ধারণের এক অনন্য প্রয়াস।
এই আয়োজনটি ছিল সম্মিলিত বৌদ্ধ শিক্ষার্থী সমাজের উদ্যোগে গৃহীত। কর্মসূচিগুলোর মধ্যে ছিল — রক্তদান কর্মসূচি, শান্তি শোভাযাত্রা, পায়রা অবমুক্তকরণ, ‘মনুষ্যত্ব বিকাশে বুদ্ধবাণী’ শীর্ষক আলোচনা সভা, সম্প্রীতি সম্মেলন এবং বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক সংগীত পরিবেশনা।
আলোচনা সভা ও সম্প্রীতি সম্মেলনে বক্তারা বুদ্ধের বাণীর আধুনিক প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।
প্রধান আলোচক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন:
“বুদ্ধের বাণী শুধু অতীত নয়, বর্তমান বিশ্বের হিংসা, বিভাজন ও সংকট থেকে মুক্তির পথও এখানেই নিহিত। তরুণ সমাজকে এই চেতনায় উজ্জীবিত করতে হবে।”
প্রধান অতিথি ছিলেন ড. মোহাম্মদ আল্-আমিন, যিনি বুদ্ধের শিক্ষাকে বিশ্বজনীন মানবিকতা হিসেবে তুলে ধরেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ড. সুদীপ্তা বড়ুয়া, শাসনানন্দ বড়ুয়া রুপন, রুবেল বড়ুয়া, অমল বড়ুয়া, নৃপতি রঞ্জন বড়ুয়া এবং যিশু বড়ুয়া।
সভাপতিত্ব করেন জি. নিরোধানন্দ ভিক্ষু, এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জনি বড়ুয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বরেণ্য প্রাক্তন শিক্ষক – ড. বেণু প্রসাদ বড়ুয়া, ড. দীপংকর শ্রীজ্ঞান বড়ুয়া, ও প্রফেসর সুমঙ্গল বড়ুয়া –-কে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
এই বুদ্ধ জয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রকাশিত হয় “চেতিয়গাম” নামের এক গম্ভীর ও গভীর বোধসম্পন্ন স্মারক গ্রন্থ, সম্পাদনায় জ্ঞানপ্রিয় ভিক্ষু। এর পাশাপাশি প্রকাশিত হয় বার্ষিক বর্ষপঞ্জি ও স্মৃতিস্বরূপ টি-শার্ট।
আয়োজনের শুরুতে বেতার শিল্পী প্রিয়ন্তি বড়ুয়া পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত “হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী”, যার সুর যেন নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে এই ভ্রান্ত সময়ের প্রেক্ষাপটে।
সঞ্চালনায় ছিলেন রিতু বড়ুয়া, দীপ্ত দীপ বড়ুয়া তিমু, ও নিশান বড়ুয়া পুনম।
রাউজান ব্লাড ব্যাংক এর সহায়তায় অনুষ্ঠিত হয় রক্তদানের মহতি আয়োজন — যা ছিল জীবনের প্রতি ভালোবাসা ও মৈত্রীর এক প্রত্যক্ষ প্রতিফলন।
পরিশেষে, মধ্যাহ্নভোজ ও রবীন্দ্রসংগীতানুষ্ঠানের মাধ্যমে শান্তির বার্তা ও সাম্যবোধ ছড়িয়ে শেষ হয় এ আয়োজনে। কিন্তু বুদ্ধের বাণী থেকে জাগ্রত করা চেতনার প্রদীপ আজও জ্বলছে বহু তরুণের অন্তরে।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।