প্রথম অধ্যায়: পরিপূর্ণতা ও অপরাধবোধ
#আমরা
সবাই অপরাধী- ১৮
আগের গল্পে আমি জেলখানায় যাদের নিয়ে কাজ
করেছি, তাদের সম্পর্কে বলেছি। কিন্তু এর বার্তা শুধু জেলখানার বন্দীদের জন্য নয়, বরং
বিবেকের অপরাধবোধে বন্দী যে কোন জনের জন্যই এটা প্রযোজ্য। সেই ‘অপরাধ’
যার জন্য আমরা নিজেদেরকে অপরাধী ভাবি- সেটি ছাড়াও সেই দিনে, সেই বছরে, অন্যান্য বছরগুলোতে
আমরা আর কী কী করেছি? আমরা কি দেয়ালের অন্যান্য ইটগুলোও দেখতে পাচ্ছি? আমরা কি সেই
বোকার মতো কাজ, যার জন্য আমরা অপরাধবোধে ভুগছি, তার বাইরেও দেখতে পাচ্ছি? আমরা যদি
বি ক্লাসের কাজের উপর বেশি মনোযোগ দিই, তাহলে হয়তো বি ক্লাসের লোক হয়ে উঠতে পারি। যার
কারণে আমরা আমাদের ভুলগুলো করতেই থাকি আর অপরাধবোধের পরিমাণ বাড়িয়ে চলি। কিন্তু যখন
আমরা জীবনের অন্যান্য অংশকেও দেখি, দেয়ালের অন্যান্য ইটগুলোকেও দেখি, যখন আমরা বাস্তবিক
দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করি, তখন আমাদের মনে একটা চমৎকার অন্তর্দৃষ্টির ফুল ফুটে ওঠে: আমরা
ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য।
#অপরাধবোধকে
যেতে দেওয়া, চিরদিনের জন্য- ১৮
অপরাধবোধ থেকে মুক্তির পথে সবচেয়ে কঠিন
ধাপটা হচ্ছে আমাদের নিজেদেরকে বুঝানো যে, আমরা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য। এতক্ষণ পর্যন্ত
যেসব কাহিনী বলা হলো, এগুলো আমাদেরকে কিছুটা হয়তো সাহায্য করে, কিন্তু এই বন্দীদশা
থেকে মুক্তির শেষ ধাপে একাই এগিয়ে যেতে হয়। আমার এক বন্ধু শৈশবে তার এক সেরা বন্ধুর
সাথে খেলছিল একটি ঘাটের পাড়ে। মজা করতে গিয়ে সে তার বন্ধুকে ঠেলে দিল পানিতে। তার বন্ধুটি
ডুবে মরল। এরপর থেকে অনেক বছর ধরে সেই বন্ধুটি তার মনের মধ্যে কিলবিল করতে থাকা অপরাধবোধ
নিয়ে জীবন কাটাল। তাদের বাড়ির পাশেই তার মৃত বন্ধুর বাবা মা থাকত। সে বড় হয়ে উঠতে লাগল
এই অপরাধবোধ নিয়ে যে সে তাদেরকে সন্তানবঞ্চিত করেছে। এরপর এক সকালে, সে যেমনটা আমাকে
বলেছে, সে নাকি উপলদ্ধি করেছিল যে তার আর নিজেকে দোষী ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। সে তার
নিজের তৈরী কারাগার থেকে বেরিয়ে এল স্বাধীনতার উষ্ণ হাওয়ায়।
----------------প্রথম অধ্যায় শেষ---------------
----------------প্রথম অধ্যায় শেষ---------------
প্রথম অধ্যায়ের সকল গল্প>>
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।