মাঘী পূর্ণিমা গাথা
১। শ্রী মাঘী পূর্ণিমা তিথি অতি শুভক্ষণ,
চতুরদিকে উকি দেয় বসন্ত তখন।
২। চাষীদের ঘরে থাকে গােলাভরা ধান,
আনন্দে ভরিয়া থাকে সকলের প্রাণ।
৩। নাতি গ্রীষ্ম, নাতি শীত, নহে বর্ষা আর,
হাসির ফোয়ায়া ছুটে আনন্দে সবার।
৪। মাঠে মাঠে বসে যায় কতরূপ মেলা,
বেচা-কেনা করে লােকে, করে কত খেলা।
৫। আনন্দে ঘরে কত পিঠা করে,
রসেতে ডুবায়ে তাহা খায় সমাদরে।
৬। প্রতিবেশীদের করে কত আপ্যায়ন,
মনের আনন্দে করে আলাপন।
৭। সে সময়ে চারিদিকে করিতে ভ্রমণ,
কোনরূপ অসুবিধা নহে কদাচন।
৮। এমন সময়ে বুদ্ধ ভ্রমিতে ভ্রমিতে,
উপনীত হইলেন চাপাল চৈত্যেতে ।
৯। কন্দর্পের নিমন্ত্রণ
গ্রহণ করিয়া,
পরিনির্বাণের দিন দিলেন ঘােষিয়া ।
১০। তিসমাস পরে গিয়া কুশীনারা স্থান,
মল্লরাজ শালবনে হবেন নির্বাণ ।
১১। সে হেতু এ পূর্ণিমাতে
উপাসথ নিয়া,
অনিত্য, অনাত্ন ভাব স্মরণ করিয়া স্মরণ ।
১২। বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘ গুন করিয়া স্মরণ,
সবে করি নির্বানের
হেতু উপার্জন ।
১৩। সংযােগের ফলে যাহা উৎপন্ন হইবে,
কালের কবলে পড়ে ধ্বংশ হয়ে যাবে ।
১৪। যাহা কিছু ধ্বংশশীল সকলি অনিত্য,
তাহাই দুঃখের হেতু, তাহাই অনাত্ন।
১৫। সংযােগে উৎপন্ন যাহা কিছু দেখি তাই,
অনিত্য ব্যতীত অর নিত্য কিছু নাই ।
১৬। সংযােগের উৎপন্ন বুদ্ধ এল এই ধরাতে,
বিয়ােগ হলেন তাই জগত হইতে।
১৭। এ জগত জলাশয়ে বুদ বুদ মতন,
ধ্বংশ হবে, নিত্য কিছু নহে কদাচন।
১৮। সেইরূপ আমি-তুমি যত আছে প্রাণী
ধ্বংস হবে সবে, পাবে বিচ্ছেদের
ঘ্রাণী।
১৯। তাই ভবে যতদিন থাকে বিদ্যমান,
অকুশল ত্যাগী করে কুশল ধীমান ।
২০। আমরাও সবে এই পুণ্যতিথি
স্থরে,
পুজা ও বন্দনা করি অবনতঃ শিরে।
২১। এ রূপে অনিত্যতা করিয়া ভাবনা,
শ্রদ্ধা যুক্ত চিত্তে করি পূজা ও বন্দনা।
২২। যে পুণ্য মােরা অর্জন মােরা করিলাম ভবে,
সুখী হও আমাদের পুণ্যের প্রভাবে ।
২৩। দেব নর যত আছে প্রাণীগণ ভবে,
সুখী হও আমাদের পুণ্যের প্রভাবে ।
২৪। সুখী হয়ে সুখে রক্ষা করহ সবার,
যেন হয় নির্বাণ লাভ দেব ব্রহ্ম ঘুরে ।
২৫। এ পুণ্য গ্রহণ করে কর আশীবাদ,
অনির্বাণ পুণ্য যেন না হয় প্রমাদ।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।