গৌতম বুদ্ধের বংশ পরিচয়
গৌতম বুদ্ধ পৃথিবীর বুকে এমন একটি নাম যিনি এক বিন্দু রক্তপাত ছাড়াই প্রচার করেছেন তার ধর্ম। গৌতম বুদ্ধের জীবনী না পড়লে তার সম্পর্কে অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে। ত্রিশরণ চেষ্টা করেছে গৌতম বুদ্ধের জীবনী নিয়ে বিস্তারিত লিখতে। গৌতম বুদ্ধের জীবনী কোন ক্ষুদ্র গল্প নয়। এক বিশাল গ্যাল্যাক্সি সমান গৌতম বুদ্ধের মহিমান্বিত জীবন। আমরা গৌতম বুদ্ধের এই মহান জীবনী পর্ব পর্ব করে লিখতে চেষ্টা করবো। প্রতিটি পর্বের শেষে পরবর্তী পর্বের লিংক দেওয়া থাকবে। দয়া করে আপনারা পড়ে শেয়ার করে দিবেন আপনার ফেইজবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম সহ সকল স্যোসাল মিডিয়াতে।
আড়াই হাজার বৎসর পূর্বেকার কথা। গিরি শ্রেষ্ঠ হিমালয়ের গাঁ ঘেঁষে বয়ে চলেছে রোহিনী নদী
এরই তীরে একটি সমৃদ্ধশালী রাজ্যের নাম কপিলবস্তু । শাক্যরাজগণ এ রাজ্যে রাজত্ব করতেন। তাঁরা ছিলেন ক্ষত্রিয়, ইক্ষাকু ছিল তাঁদের বংশের নাম।
একদা শাক্যরাজ জয়সেন যখন রাজত্ব করেন তখন দেবদহের অধীশ্বর ছিলেন দেবদহ শাক্য রাজা জয়সেনের পুত্র সিংহহনু দেবদহ শাক্যের কন্যা কাত্যায়নীকে বিয়ে করেন। কালক্রমে সিংহহনুর ঔরসে কাত্যায়নীর গর্ভে শুদ্ধোদন, ধৌতদন, শুক্লোদন ও অমিতোদন নামে চার পুত্র এবং অমিতা-প্রমিতা নামে দুই কন্যা জন্মেছিল।
এদিকে দেবদহ শাক্যের পুত্র অঞ্জন শাক্য রাজা জয়সেনের কন্যা যশোধরাকে বিয়ে করেন । কালক্রমে অঞ্জনেরও দণ্ডপাণি ও সুপ্রবুদ্ধ নামে দুই পুত্র এবং মহামায়া ও মহাপ্রজাপতি গৌতমী নামে দুই কন্যা জন্মেছিল । কুমার শুদ্ধোদন বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হন। রাজা সিংহহনু শুদ্ধোদনের বিয়ের প্রস্তাব করে সর্বসুলক্ষণা কন্যা অনুসন্ধান করতে মন্ত্রী পরিষদকে আদেশ দিলেন। মন্ত্রীগণ নানা রাজ্য ঘুরে দেবদহ রাজ অঞ্জনের জ্যেষ্ঠা কন্যা মহামায়াদেবী সর্বসুলক্ষনা ও ধর্মশীলা বলে রাজাকে জানিয়ে দিলেন। তখন রাজা সিংহহনু মহামায়ার বিবাহের আলোচনাক্রমে নানা উপঢৌকন সহ যুবরাজ শুদ্ধোদনকে দেবদহ পাঠিয়ে দিলেন।
আরো পড়ুন>>
- গৌতম বুদ্ধের জীবনী: মহামায়ার স্বপ্ন
- গৌতম বুদ্ধের জীবনী: বোধিসত্ত্বের জন্ম।
সিংহহনুশাক্য রাজাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ । অন্যান্য শাক্যরাজ তাঁদের সামন্ত রাজা। তাই রাজা অঞ্জন এ প্রস্তাব পেয়ে অতিশয় আনন্দের সহিত মহামায়াদেবীকে বিয়ে দিলেন। শুদ্ধোধন ও মহামায়াদেবী অতীব ধর্মপরায়ণ ও ন্যায়নিষ্ঠাবান ছিলেন। তাঁদের রাজ্যে কোন প্রকার অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা ছিলনা, সকলেই সুখে-শান্তিতে বসবাস করত। এমন ধনে জনে ভরা সুখের রাজত্ব, তবুও শুদ্ধোদন ও মহামায়াদেবীর মনে শান্তি নেই। মনে একটা বিষাদভাব। কেননা শুদ্ধোদনের বিয়ের পর কয়েক বৎসর অতীত হয়ে গেল কিন্তু সন্তান-সন্ততির কোন লক্ষণ দেখা গেল না।
অনেক পূজা-পার্বন, ব্রত-নিয়ন, যাগ-যজ্ঞাদি করে সন্তানাদির প্রত্যাশায় রইলেন। রাজা সিংহহনু অনেক ভেবে চিন্তে শাক্য বংশ রক্ষার নিমিত্তে শুদ্ধোদনকে দ্বিতীয় ভার্যা গ্রহণের অনুমতি দিলেন। শুদ্ধোদন পিতৃ আদেশে মায়াদেবীর সাথে পরামর্শ করে মহাপ্রজাপতী গৌতমীকে বিয়ে করেন। যথাকালে রাজা সিংহহনু দেহত্যাগের পর যুবরাজ শুদ্ধোদন সর্বসম্মতিক্রমে পিতৃ সিংহাসনে আরোহণ করেন।
আমাদের কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কমেন্ট পড়া মাত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করবো।